স ত্য প্রি য় মু খো পা ধ্যা য়
ভারত
চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ নই--- তবু বিচ্ছিন্নভাবে বিশ্বের বিখ্যাত কিছু প্রথাভাঙা সিনেমা দেখবার অভিজ্ঞতা আমার আছে। গোদারের একাধিক ফিল্ম আমি দেখেছি। কিন্তু অশোক বিশ্বনাথন বাংলা সিনেমা জগতে প্রথম থেকেই এবং আজ পর্যন্ত এক প্রথাভাঙা চলচ্চিত্রকার।তাই তাঁর ভয়ংকর নাম কিন্তু প্রথামতো জনপ্রিয়তা নেই। দর্শককে ডেকে এনে নিছক বিনোদন বিতরণ করা তাঁর স্বভাববিরুদ্ধ।বিনোদন তো থাকেই,তাঁর সিনেমায়, এসব ডিঙিয়ে আরও কিছু থাকে যা তাঁকে অশোক বিশ্বনাথন করে তুলেছে।
তাঁর নতুন সিনেমা 'হেমন্তের অপরাহ্ণ ' মুক্তি পাবে খুব শিগগির। যাঁরা তাঁর সিনেমা দেখতে অভ্যস্ত, যাঁরা তাঁর সমঝদার বা নিন্দুক, যাঁরা তাঁর আগের সিনেমা 'শূন্য থেকে শুরু ', 'কিছু সংলাপ কিছু
প্রলাপ ', 'স্বপ্নের সন্ধানে ', 'ব্যতিক্রমী ' ইত্যাদি দেখেছেন, তাঁদের কাছেও রিলিজ - পেতে - চলা তাঁর নতুন চলচ্চিত্র সম্পর্কে কিছু বলবার আছে।
সিনেমায় অশোক কখনো গল্প বলেননি, বলতে চাননি, এখনো তিনি তা চান না। এটাই ওঁর চলচ্চিত্রের চাল।তাতে ঘটনা গল্প হয়ে ওঠে না ঠিকই কিন্তু ক্লাইমাক্স - অ্যান্টিক্লাইম্যাক্সের গতানুগতিক গলিতে বাধা না পেয়ে, তাঁর সিনেমায় ঘটনা মহাবিস্তৃতি লাভ করে।জীবনী হয়ে ওঠে জীবন। কাহিনিতে গল্প থাকলে থাকবে কিন্তু গল্প বলবার দায় চলচ্চিত্র পরিচালক নিজের হাতে তুলে নেননি। এই নির্দায়িত্বের নির্ভারতা তাঁর চলচ্চিত্রে অন্য মাত্রা পায়, তাঁর চলচ্চিত্রের ঘটনাপ্রবাহকে অন্য মাত্রা দেয় --- ঘটনা হয়ে ওঠে মহাঘটনা। আলোচ্য সিনেমায় নিতান্ত দেশজ অতি সাদামাটা ঘটনা আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতের স্রোতে অঙ্গাঙ্গিভাবে মিলেমিশে গিয়ে একটা আলাদা সমীকরণ রচনা করেছে যা মনস্ক দর্শকের নজর এড়াবে না। এতো বড় একটা প্রেক্ষাপটকে তিনি তাঁর আগের কোনো ছবিতে এভাবে একই সূত্রে গাঁথতে পেরেছেন বলে মনে হয় না। আমরা শুধু মুগ্ধ হয়ে ভাবি সামান্য একটি রুপোলি পর্দায় কলকাতার নাতিদূরবর্তী মফস্বলের সঙ্গে সারাবিশ্বের নিবিড় সম্পর্ককে কী যাদুতে স্থাপিত করতে পেরেছেন পরিচালক! কাজটিকে সফল করে তুলতে তাঁকে মাঝেমাঝে জাদুবাস্তবতের সাহায্য নিতে হয়েছে। ফলে ' হেমন্তের অপরাহ্ণ ' আঞ্চলিক ছবি হওয়া সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক উপাদান। এ চলচ্চিত্রে স্পষ্ট একজন নায়ক এবং নায়িকাও আছে। স্পষ্ট কিছু আখ্যান ও একটা গল্পের আদল আছে --- এ হল এক অসমবয়সী পুরুষ ও নারীর সম্পর্কের কাহিনি। এখানে ' সম্পর্ক ' শব্দটা খুব সচেতনভাবে প্রয়োগ করা হল।তাহলে কি এটা পারস্পরিক প্রেমের গল্প? নাকি স্নেহের? নাকি বিপরীত লিঙ্গের মধ্যে মানবিক আদানপ্রদানসুলভ সম্পর্কের কথা এখানে বলা হয়েছে! চলচ্চিত্রকার সমস্ত কিছুই জলের মতো স্বচ্ছ রেখেছেন তবে দর্শকদের কিছুই স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেননি। তাতে ছবিটি আরও জমে উঠেছে। শেষ দৃশ্য পর্যন্ত উৎকন্ঠা ধরে রাখতে পেরেছে।
খুব সংক্ষেপে গল্পটা একটু বলা দরকার। আলোচনার সুবিধে হবে।
বিবাহিত জীবনে সাধারণভাবে সুখী, ঘোড়ায় চড়া, ছড়া লেখা ইত্যাদি জীবনের সামান্যতম স্বপ্নও - না -মেটা কিন্তু জীবন সম্পর্কে অবিক্ষুব্ধ,জীবনতুষ্ট এক বিপত্নীক নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ ও মফস্বলের একটি কলেজ - পড়ুয়া মেয়ে আচমকা পাড়ার ক্লাবের অভিনয়সূত্রে পরস্পরের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। নায়ক সুধীনবাবুর পুত্র আছে তবে তার সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই। এ ক্ষেত্রেও তিনি অভিমানী হলেও বিক্ষুব্ধ নন। সে কর্মসূত্রে আছে ইউক্রেনে। ইউক্রেন কোথায়, যুদ্ধ বেধে যাবার পর কী সেখানকার পরিস্থিতি বা এই ঘটনার আন্তর্জাতিক - রাজনৈতিক অভিঘাত কতোটুকু এ সম্পর্কে সুধীনবাবুর স্পষ্ট ধারণা নেই --- তিনি এতোটাই সরল। কিন্তু পাড়াপ্রতিবেশিদের তথা নাটকে তাঁর মহড়াসঙ্গীদের সহায়তায় ছেলের ফোন নম্বর পাবার পর,যখন তিনি বারবার ফোন করেও ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না, তাঁর বুকের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধের আবহ - শব্দ গমগম করে ওঠে! এ জাদুবাস্তব ছাড়া আর কি? চলচ্চিত্রে প্রযুক্ত সাউণ্ড এফেক্টও যে যাদুবাস্তব হয়ে উঠতে পারে,এ দৃষ্টান্ত বিরল।
আসলে বিশ্বের কোনো সমস্যাই বিচ্ছিন্ন নয় --- এমন কি মানুষের ব্যক্তিক একান্ত বিপন্নতাও। উপাদানগতভাবে 'হেমন্তের অপরাহ্ণ ' সিনেমায় স্থান - কাল - পাত্র সব স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে সোচ্চার অথচ তারা একত্রসংবদ্ধ,ইন্টারলিঙ্কত --- অন্তর্গতভাবে জড়িয়ে আছে।এবং সমস্ত কিছুকে পৃথক রেখেও স্থান - কাল - পাত্রগত স্বাতন্ত্র্যকে জারি রেখেও, তাদের সমন্বিত করা সম্ভব হয়েছে জাদুবাস্তবতার ছোঁয়ায়।তাই তাঁর ফিল্মে দেশ হয়ে উঠছে দেশাতীত,কাল হয়ে উঠছে কালতীত।তাঁর আখ্যানের পাত্রপাত্রীরাও নির্দিষ্ট একটা অঞ্চলের হওয়া সত্ত্বেও অঞ্চলাতীত সত্তা।
সিনেমার একাধিক দৃশ্যে সুর রিয়ালিজমেরও সার্থক প্রয়োগ আছে। তা ঝিমিয়ে পড়া দর্শককে চকিতে চমকে দিয়ে,টানা কাহিনির ক্লান্তি থেকে মুক্ত করে, তার নিষ্ক্রিয় মস্তিষ্ককে চাঙ্গা করে তুলবে।আখ্যানের বাইরে বেরিয়ে এসে তাকে তার অবচেতন জগতের গভীরে ডুবে থাকা পরাবাস্তবের দরজা খুলতে বাধ্য করবে।
সিনেমায় হঠাৎ হঠাৎ এক পাগলের আবির্ভাব সমস্ত গতানুগতিক ঘটনা স্রোতকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। এ পাগল যেনো বাস্তব জগতের পাগল নয়,অধিবাস্তব জগত থেকে কীকরে সে মেমে এসেছে বাস্তব জগতে।কাহিনিতে পূর্বে বিবাহিত কিন্তু বর্তমানে বিপত্নীক সুধীনবাবুর জীবনে তাঁর স্ত্রী ছাড়া আর কোনো নারীর সন্ধান দর্শক পাবেন না।সিনেমার নায়িকা পাপিয়া - পূর্ববর্তী জীবনে তিনি ছিলেন একনারীসম্পৃক্ত চরিত্র। পর্দায় তাঁর মৃতা স্ত্রীর আগমন ঘটেছে বেশ কয়েক বার। এখানেও সেই যাদুবাস্তবের খেলা।সেই সঙ্গে সুর রিয়ালিজমের ছোঁয়াও আছে।এ যেনো যাদুবাস্তবে মেশা পরাবাস্তব চরিত্র। মনস্ক দর্শক তা উপলব্ধি করবেন।জাদুবাস্তব ও সুর রিয়ালিজমের ওপর ভর করে নিজস্ব ভঙ্গিতে চলচ্চিত্রকার এখানে কল্পনা - বাস্তব,অতীত - বর্তমান - ভবিষ্যৎ-কে ভেঙেচুরে গুঁড়িয়ে আবার জোড়া লাগিয়ে দিয়েছেন মূল আখ্যানের অবয়বে।এ চলচ্চিত্র শোনবার নয়,বলবার নয় শুধু দেখবারও নয় বরং জীবনের গভীরে গিয়ে ভাববার।অথচ কাহিনি কোথাও খেই হারাচ্ছে না,চোট খাচ্ছে না,সিনেমা তার সিনেমাত্ব বজায় রাখছে পরতে পরতে।বিবাহিত জীবনে সুধীনবাবু ছিলেন একনারীকেন্দ্রিক চরিত্র এবং সে নারী তাঁর বিবাহিতা স্ত্রী। তাঁকে যে তিনি যথেষ্ট ভালোবাসতেন সে ইঙ্গিত বিভিন্নভাবে বিভিন্ন দৃশ্যে আছে।সুধীনবাবুর যেমন ছড়া লেখবার,ঘোড়ায় চড়বার, তাঁর স্ত্রীরও তেমনি নাচ শেখবার ইচ্ছে ছিল।স্ত্রীর নাচ শেখবার ব্যাপারে তাঁর স্বামী সুধীনের যে আপত্তি ছিল তাও কিন্তু নয়,তবে বাস্তব জীবনে তাঁরা তা ঘটিয়ে তুলতে পারেননি।তাই শেষ বয়সে এসে সুধীনের আফসোস --- জীবনে কিছুই তো হল না! নিঃসঙ্গ নায়কের মনে স্বপ্নের জগতে কল্পনায় এইসব প্রসঙ্গ,অনুষঙ্গ সিনেমার দৃশ্যে পরিচালক ফুটিয়ে তুলেছেন। চমকটা অন্যখানে। সুধীনবাবুর একই স্ত্রীর ভূমিকায় পরিচালক দুজন অভিনেত্রীকে দিয়ে অভিনয় করিয়েছেন।
পুরুষের হয়তো বা (নারীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য) তার জীবনের স্বীকৃত নারীকে ঘিরেই মনের গহিনে, অবচেতনে একাধিক দৃশ্যরূপ তথা দেহাবয়ব,মুখাবয়ব থাকে!
বিবাহিতা স্ত্রী তো বাস্তব ঘটনা।তাকে ঘিরে বাস্তবের মধ্যেই আর এক যাদুবাস্তব নারীর কাল্পনিক দৃশ্যরূপ, অর্থাৎ আমার জীবনের বাস্তব নারীটি দৃশ্যরূপে যদি এই রকম হতো,এমন একটা ভাব কি ব্যক্তি - কল্পনায় থাকা একান্তই অসম্ভব? অথবা বাস্তব স্ত্রীকে তিনি হয়তো কল্পনায় ওই দৃশ্যরূপেই দেখেন!এইসব অমূর্ত ভাবনাকে পর্দায় দৃশ্যমান করে তোলা খুব কঠিন কিন্তু পরিচালক অশোক বিশ্বনাথন খুব সহজে তা করতে পেরেছেন, তাঁর হাতে সুর রিয়ালিজম ও ম্যাজিক লিয়ালিজমের যাদুদণ্ডটি ছিল বলে।আমরা মনে করি 'হেমন্তের অপরাহ্ণ ' অশোক বিশ্বনাথনের জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য সিনেমা হতে চলেছে।
সিনেমায় জাদুবাস্তব ও সুর রিয়ালিজমের প্রয়োগ আগে ঘটেনি একথা বলা যাবে না।বাংলা সিনেমায় এই ধারায় অশোকই প্রথম, একথাও আমরা বলতে চাই না।মনে রাখতে হবে, চাবুক মারলে ঘোড়া ছোটে বটে,তবে সব ঘোড়া সব সহিসের হাতে কথা বলে না। ঘোড়ার অনুষঙ্গে মনে পড়ে গেল,আলোচ্য ছবিতে একটি ঘোড়ায় চড়বার দৃশ্য আছে। এও সেই বাস্তবের জমিতে অধিবাস্তবকে ডেকে আনা।আগেই বলা হয়েছে এখানে সুধীনবাবুর একই স্ত্রীর ভূমিকায় পরিচালক ভিন্ন দুজন অভিনেত্রীকে দিয়ে অভিনয় করিয়েছেন।এক অংশে আছে যেনো স্বপ্নের জগতে একটি নাচের দৃশ্য আর একটি দৃশ্যে সুধীনবাবু তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে নিজের জীবনের হিসেব - নিকেশ নিয়ে স্বপ্নবাস্তব কন্ঠস্বরে কথা বলে চলেছেন।এও অধিবাস্তব মেশানো যাদুবাস্তবের প্রয়োগ।
সিনেমাটির আরও একটি দিক আছে। ' হেমন্তের অপরাহ্ণ ' মফস্বলভিত্তিক আধুনিক জীবনের গল্প যা সচরাচর দেখা যায় না।ইচ্ছে করই শুটিং প্লেস হিসেবে এখানে বেছে নেওয়া হয়েছে বগুলা,কৃষ্ণনগর ও রাণাঘাট অঞ্চল। কিছুটা বা শুট করা হয়েছে সোনারপুরে। নায়কসহ এই সিনেমার কোনো পাত্রপাত্রী তথাকথিত উচ্চবংশজাত নয় --- গল্পের নায়ক সুধীন দাস,নায়িকার নাম পাপিয়া দেবনাথ।ঝকঝকে নতুন তরুণ কিছু মুখ এই সিনেমায় আমরা দেখতে পাবো।যারা তাদের অভিনয় ক্ষমতায় তো বটেই, প্রাণশক্তিতে চলচ্চিত্রটিকে চনমনে করে রেখেছে।
নায়ক - নয়িকা আছে এমন সিনেমায় সাধারণত ঘটনা শেষ হয় ট্রাজেডি বা কমেডিতে।এ হল মোটা দাগের সমাপ্তি।এই আদলেও উৎকৃষ্ট মানের অনেক চলচ্চিত্র আমরা পেয়েছি। আলোচ্য সিনেমায় এক্ষেত্রেও অশোক ব্যতিক্রম। নায়ক - নায়িকার ঘটনাগত মিলন এখানে ঘটেনি।বিচ্ছেদও ঘটেনি। তবু একে ট্রাজেডি বলা যাবে না। কমেডিও বলা যাবে না।অনেক সময় আমাদের জীবনে ট্রাজেডির ভেতর কমেডি ও কমেডির ভেতর ট্রাজেডি মিশে থাকে। জীবনে সব বিচ্ছেদ যেমন, সব মিলনও স্পষ্ট মীমাংসা খুঁজে পায় না। সব প্রেমের সার্থকতা মিলনে নয়।বরং মিলনে প্রেম তীক্ষ্ণতা হারিয়ে গোদা হয়ে উঠতে পারে।অমিলনেও,বিচ্ছেদ বলা হল না কিন্তু, ভালোবাসার ইঙ্গিত থাকে।'হেমন্তের অপরাহ্ণ ' চলচ্চিত্রে পরিচালক জীবনের এই সূক্ষ্মতাকে ধরতে চেয়েছেন।নাহলে সিনেমার এক্কেবারে শেষের দিকে একটি দৃশ্যে সুধীনবাবুর জন্যে পাপিয়ার চোখ দিয়ে টপ টপ করে নীরব অশ্রু ঝরবে কেনো? বৃদ্ধ সুধীনবাবু তাঁর অতিবৃদ্ধ বয়সে পাপিয়ার জন্যে অভিমানই বা জমিয়ে রাখবেন কেনো!
এতো কতা বলতে গিয়ে একথা বলা হয়নি,আমি এই সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করবার সুযোগ পেয়েছি। এবং আমার বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অশোকের মেয়ে অনূষা বিশ্বনাথন। স্বীকার করবো,শুটিং করবার সময় সিনেমার কিছুই আমি বুঝতে পারিনি, পরিচালকের নির্দেশে অন্ধের মতো তাঁকে অনুসরণ করে গেছি শুধু।সিনেমা এডিট হয়ে যাবার পর স্বয়ং পরিচালক আমাকে পাশে বসিয়ে ছোটো পর্দায় দৃশ্যের পর দৃশ্য দেখিয়ে তাঁর কাজের ব্যাখ্যা করেছেন।তাই এতো কথা বলা গেলো।
শুটিং চলাকালীন আমার নায়িকা অনূষা একবার আমাকে বলেছিল --- সিনেমার কাজ কি জানো,দর্শক যেখানে পৌঁছাতে চায় কিন্তু বাস্তবে পৌঁছোতে পারছেনা,তাকে তার সেই ইচ্ছের জায়গায় পৌঁছে দেওয়া।আমার ধারণা অশোক এ সিনেমায় তা পেরেছে। এখানে এমন কিছু উপকরন আছে যা শুধু বিদগ্ধ দর্শক নয় সাধারণ মানুষেরও খুব ভালো লাগবে।আর কাজের মৌলিকতায় 'হেমন্তের অপরাহ্ণ ' সূত্রে অশোক বিশ্বনাথনের নাম সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক,মৃণাল সেন,বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, গৌতম ঘোষের সঙ্গে একই পংক্তিতে যুক্ত হয়ে পৃথক একটি আলোর মতো জ্বলবে।